শহীদ জিয়া : দেশ বিনির্মাণে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান

জিয়া লাইব্রেরি ডেস্ক : শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারী বগুড়া জেলার বাগবাড়ী প্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগগ্রহন করেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে জিয়াউর রহমান দ্বিতীয়। ১৯৫২ সালে তিনি করাচি একাডেমি স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি করাচিতে ডি. জে কলেজে ভর্তি হন। একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারী একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৫৫ সালে সামরিক বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। করাচিতে দু’বছর চাকরি করার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হয়ে পূর্ব পাকিস্থানে আসেন। এছাড়াও তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পযর্ন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার জন্য বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগ লাভ করেন। একই বছর তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটার স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদে পদোন্নতি পেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জয়দেবপুরে সেকেন্ড ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত, নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালীদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা ও মানুষের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি শুরু করলে জিয়া দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিগ্রোহ ঘোষনা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধে পরাজিত হলে নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও সেদিন দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। স্ত্রী- সন্তানদের জীবন বিপন্ন হতে পারে জানা সত্তে¡ও জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করার জন্য নিজ নামে জেড ফোর্স গঠন করেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বিরত্বপুর্ণ অবদান রাখেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হলে লাল সবুজের পতাকায় শোভিত স্বাধীন দেশে তিনি পুনরায় সেনাবাহিনীতে ফিরে যান এবং ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে তিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধুর সরকার জিয়াউর রহমানকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিত ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ক্যু ও পাল্টা ক্যুর মাধ্যমে দেশ যখন চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকটে নিপতিত তখন জিয়াউর রহমান আবার দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব ও সংহতির মধ্যদিয়ে তিনি গৃহবন্দীত্ব রথকে মুক্ত হয়ে জনগনের আশা আকাংখার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা তাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পাদপিঠে আসীন করে। জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ২৩ জুন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানিকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

এখানে একটি কথা প্রনিধানযোগ্য যে, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী তৎকালীন সরকার সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল তথা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে। মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। বাকশাল প্রবর্তনে রুষ্ঠ সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনে ব্যাকুল ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জিয়াউর রহমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রথা বাতিল করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। গণমাধ্যমের উপর থেকে সকল কালাকানুন প্রত্যাহার করে মুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেন। একটি রাজনৈতিক সরকার যেখানে সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করেছিল তখন জাতির প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী থেকে আসা একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী সৈনিক স্বাধীনতার অন্যতম মূলস্তম্ভ বহুদলীয় গণতন্ত্র জাতিকে উপহার দিয়ে মুক্ত গনতান্ত্রিক চর্চার পথকে সূগম করেছিলেন। এখানেই জিয়াউর রহমানের সাথে অন্যদের পার্থক্য। জিয়া সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর পর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেন এবং তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ১৯ দফা কর্মসূচি অনুযায়ী বাংলাদেশে উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক নবধারা প্রবর্তন করেন।

জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও তিনি তাঁর যোগ্যতা, দক্ষতা, মেধা, সততা ও ন্যায় পরায়ণতা দিয়ে সবার মন জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় দেশের প্রায় প্রতিটি ক্রান্তিকালে অসামন্য অবদান রেখেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে দেশ গঠনে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। কৃতজ্ঞজাতি আজও তাঁর আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। সততার মাপকাঠিতে তিনি আজও অনন্য ও অদ্বিতীয়। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়েই দেশের চলমান অবনতিশীল আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি করেন। শক্তহাতে চুরি, ডাকাতি ও দুর্ণীতির লাগাম টেনে ধরেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। তিনি গ্রামীন অর্থনীতির চাকাকে সচল করার জন্য ১৯৭৫ সালের শেষের দিকে যশোরের ‹উলশী› গ্রাম থেকে স্ব-নির্ভর আন্দোলন কর্মসূচির সূচনা করে গ্রামীন জনপদের প্রতিটি মানুষকে স্বনির্ভর হতে উদ্ভুদ্ধ করেন। তিনি দেশের ৬৮ হাজার গ্রামের প্রতিটিকে এক একটি স্ব-নির্ভর ইউনিট হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান স্বনির্ভর আন্দোলনের সাথে কৃষি, সেচ, বৃক্ষরোপন, গৃহ-নির্মাণ, বিদ্যুতায়ন, স্বাস্থ্যরক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা এবং আইন শৃংখলা ব্যবস্থাকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। খাদ্যে স্বাবলম্বী হবার বিষয়টিকে জিয়াউর রহমান তাঁর জাতীয় নীতি হিসেবে ঘোষনা করেছিলেন। খাদ্য উৎপাদন দ্বি-গুণ করাকে স্বনির্ভরতা আন্দোলনের সোপান হিসেবে মনে করতেন জিয়াউর রহমান। এলক্ষ্যে তিনি খাল খনন করে শুষ্ক মৌসুমে সেচ ব্যবস্থা সচল করা, একই জমিতে একাধিক ফসল ফলানো, পতিত জমিতে চাষাবাদে গুরুত্বারোপ করাকে তার উন্নয়নের অগ্রাধিকার কর্মসূচি হিসেবে দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। খড়া মৌসুমে চাষাবাদে নিরবিচ্ছিন্ন সেচ নিশ্চিত করনে তাঁর আমলে প্রায় ৯০০ মাইল দীর্ঘ খাল খনন করা হয়েছিল।

জিয়াউর রহমার দেশকে স্বনির্ভরতার লক্ষ্য অর্জনের পরিপূরক হিসেবে গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। গণস্বাক্ষরতা কর্মসুচিকে মুলধারার শিক্ষার সাথে সংযুক্ত করে দেশের স্বাক্ষরতার হারকে বৃদ্ধি করেছিলেন। মূলত মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারন করে তিনি ১৯৮০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বহুল প্রশংসিত গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি ঘোষনা করেছিলেন। গণনন্দিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে খুব স্বল্প সময়ে দেশে প্রায় ৪০ লক্ষ নিরক্ষর মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দান করতে পেরেছিলেন। মুলত ১৯৮৫ সালের মধ্যে দেশের স্বাক্ষরতার হার ৮০% উন্নীতকরণের লক্ষমাত্রা নিয়ে জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরতা কর্মসূচি ঘোষনা করেছিলেন।

জিয়াউর রহমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে দেশের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে ‘এক ছেলে এক মেয়ে’ ধারণাকে নীতি ও আদর্শ হিসেবে প্রচার করেন এবং তা বাস্তবায়নে ১৯৭৬ সালে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ৩৮ হাজার পরিবার পরিকল্পনা কর্মী নিয়োগ করেন। ক্ষমতাকে গ্রাম পর্যন্ত বিকেন্দ্রীকরণ করার জন্য এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষে ১৯৮০ সালের ৩০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাম সরকার ব্যবস্থা প্রচলণ করেন। ১৯৮০ সালের ২১ জুন জিয়াউর রহমানের সরকার মহান জাতীয় সংসদে গ্রাম সরকার বিল উত্থাপন করেন এবং তা একই দিনে অনুমোদিত হয়। এর ফলে ছোট ছোট সমস্যা গ্রামেই সমাধান হতে থাকে। মামলা মোকদ্দমা উল্লেখযোগ্যহারে কমে আসে। ১৯৭৮ সালের এক জরিপে জানা যায় যে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২২ শতাংশই যুবক। হতাশা, সন্ত্রাস ও বেকারত্ব ও মাদকাসক্ত থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করে তাদেরকে উন্নয়নের মুলধারায় ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শেরে বাংলা নগরে দুদিন ব্যাপী জাতীয় যুব সস্মেলন আয়োজন করে যুব সমাজকে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। যুব সমাজকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর জন্য ১৯৭৮ সালে তিনি দেশে প্রথমবারের মত যুব মন্ত্রনালয় চালু করেন। জেলায় জেলায় যুব কমপ্লেক্স চালু করে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তাদের স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায়্য করেন। গ্রামীণ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেশীয় উন্নয়ণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতিয়ার হওয়া সত্তে¡ও স্বাধীন দেশে তা ছিলো অনেকটায় অবহেলিত ও উপেক্ষিত। গ্রামের মানুষের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য শহীদ জিয়া ১৯৭৬ সালে ভিডিপি বা গ্রাম প্রতিরক্ষা দল গঠন করেন। সেদিনের সেই বাহিনী আজ গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। আজকের শিশু আগামীর রাষট্রনায়ক। তাইা শহীদ জিয়া শিশুদের মেধা বিকাশের জন্য ১৯৭৭ সালের ১৫ জুলাই শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শিশুদের মেধাবিকাশে টিঁভিতে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা চালু করে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট জিয়া বহিবিশ্বে দেশের অপ্রচলিত গার্মেন্টস শিল্প, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করেছিলেন। জিয়ার হাতধরেই গড়ে উঠা সেদিনের শিশু গার্মেন্ট শিল্প আজ দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। এই বিপুল সংখ্যক নারীকে কর্মহীন রেখে কোনভাবেই যে সদ্য স্বাধীন একটি জনবহুল দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় সেটা উপলব্ধি করে শহীদ জিয়া নারীদেরকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের চাকাকে গতিশীল করার জন্য মহিলা বিষয়ক মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করে নারীদের ক্ষমতায়ন ও সমাজে তাদের যথাযথ সস্মান নিশ্চিত করেছিলেন। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচার ও প্রসার এবং বিজ্ঞান মনস্ক জাতী গঠনে তিনিই প্রথম দেশে পৃথক একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাধারণ শিক্ষার সাথে মাদরাসা তথা ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় সাধন করে নৈতিকতা সম্পূর্ণ সুনাগরিক গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনদেশে সর্বপ্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা আবার স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অলম্বন করে সহজেই বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসেই ইন্দে-সোভিয়েত বলয় থেকে বের হয়ে আমেরিকা ও চীনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন। তিনি তার সাহসী, চৌকস ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতির কারণে মুসলিম বিশ্বের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি তাঁর স্বল্প সময়ের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে একক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভুমিকা পালন, আল কুদস কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া, ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থন, ওআইসিকে একটি কার্যকরি সংগঠনে পরিনত করার ক্ষেত্রে শহীদ জিয়ার ভুমিকা মুসলিম বিশ্ব আজও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। তিনিই মুলত মুসলিম বিশ্বে শ্রমবাজার সৃষ্টি করে সরকারিভাবে কর্মী প্রেরণ করেন। শহীদ জিয়া দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভু-রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টির জন্য সার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন। তাই তাঁকে সার্কের স্বপ্নগ্রষ্টা বলা হয়ে থাকে।
লেখক: আইবিএ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

জিয়া লাইব্রেরী অনলাইন
Logo