মহিউদ্দিন খান মোহন : প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষের কাছে কেন এত প্রিয় এটা নিয়ে অনেকেই ভেবে থাকেন। একজন সেনানায়ক ধূমকেতুর মতো হঠাৎ দেশের রাজনীতিতে আবির্ভূত হলেন, তারপর জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে গেলেন। কী এমন জাদু ছিল তার রাজনীতির বাঁশিতে, যার সুর এ দেশের মানুষকে বিমোহিত করেছিল। কী এমন রাজনীতি তিনি দিয়ে গেছেন এ দেশের মানুষকে, যা তাদের এখনো আন্দোলিত করে?
ওপরের প্রশ্নগুলো প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছত্রিশতম শাহাদতবার্ষিকীর দিনে কতটা প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক সে বিতর্কে যাবার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তবে এটা ঠিক যে, শাহাদতের তিন যুগ পর প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা এবং পর্যালোচনা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। কেননা, তার অবর্তমানে, যখন তার পৃথিবীর মানুষকে কিছু বলার বা কারো কথার জবাব দেয়ার ক্ষমতা বা সুযোগ কোনোটাই নেই, সে সময়ে কিছু সংখ্যক লোক তাকে নিয়ে কুৎসা রটনা করছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে। বলা বাহুল্য, যারা প্রেসিডেন্ট জিয়াকে নিয়ে নানা রকম কাল্পনিক, উদ্ভট, আর বিকৃত মিথ্যাচার করে চলেছে, তারা তার বিরুদ্ধবাদী এবং তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাকাতর। এরা মুখ খোলার মওকা পেলেই জিয়াউর রহমানের নামে গর গর করে উগড়ে দেয় কুৎসার গরল। এদের পরিচয় নতুন করে দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এরা তারাই, যারা ঊনিশ শ’ একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের পর নিজেদের জীবন বাঁচাতে যে যেদিকে পেরেছিল সরে পড়েছিল। এরা তো তারাই, যারা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ‘সুশাসন’ কায়েমের পরিবর্তে দুঃশাসনের ‘কালো ঘোড়া’ দাবড়ে জনজীবনকে দুঃসহ করে তুলেছিল। এরা তো তারাই, যারা স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের সুখ স্বপ্নকে সীমাহীন লুটতরাজ, নৈরাজ্য আর ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দ্বার দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছিল। ফলে ওই গোষ্ঠীটি সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের প্রতি ঈর্ষান্বিত। ক্রিসেন্ট লেকের উত্তর পাশের সবুজ আঙ্গিনায় মানুষ যখন দল বেঁধে তাদের প্রিয় নেতাকে শ্র্দ্ধা জানাতে যায়, তখন তাদের গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়। অসহ্য মনোযন্ত্রণায় অস্থির হয়ে তারা হামলে পড়ে জিয়া নামটির ওপর
১৯৭১। আমাদের জাতীয় জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ভয়ঙ্কর ও গৌরবের বছর। কারণ, ওই বছরে বাংলাদেশের রাজনীতি স্বাধীনতার এক দফায় এসে দাঁড়িয়েছিল। জাতির সিদ্ধান্ত নেয়ার সে বছরটি তাই ছিল অত্যন্ত গুরুত্ববহ। আমরা যদি সেদিন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করতাম, কিংবা দ্বিধান্বিত হতাম, তাহলে জাতির ভাগ্য হয়তো দুর্ভাগ্যের কালিতে লেখা হতো। একই সঙ্গে ১৯৭১ ছিল এক ভয়ঙ্কর বছর। কারণ, সে বছর এ দেশে সংঘটিত হয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত গণহত্যা। আর গৌরবের বছর এজন্য যে, ওই বছরই আমরা লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতাকে অর্জন করেছি। আর সে ঐতিহাসিক বছরেই বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল এক ক্ষণজন্মা মহাপুরুষের। তিনি জিয়াউর রহমান। মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী একজন যুবক গোটা জাতিকে উজ্জীবিত করে ফেললেন একটি মাত্র ঘোষণার দ্বারা। ‘আমরা বিদ্রোহ করলাম’ এবং ‘আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি’Ñ কথাগুলো যখন ইথারে ভেসে এ দেশের ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের কানে পৌঁছল, তারা যুগপৎ বিস্মিত ও উজ্জীবিত হলো। তারা বিস্মিত হয়েছিল এ জন্য যে, যার নাম তারা কখনো শোনেননি, কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাও যিনি নন, তিনি কোন সাহসে একটি দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিতে পারলেন! হ্যাঁ, জিয়াউর রহমান সেটা পেরেছিলেন। কারণ, তাঁর হৃদয়ে দেশপ্রেম ছিল। সে প্রেমে কোনো খাদ ছিল না। কোনো লোভ-লালসা বা কোনো প্রাপ্তির আকাক্সক্ষাও ছিল না। বোধহয় ভুল বলা হলো। প্রাপ্তির আকাক্সক্ষা তাঁর ছিল। সেটা হলোÑ একটি স্বাধীন দেশের গর্বিত নাগরিক হওয়ার প্রবল আকাক্সক্ষা তার মধ্যে ছিল। আর সে জন্যই তিনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক কাজটি করতে পেরেছিলেন। ক্রিকেট খেলায় ‘টাইমিং’টা ব্যাটসম্যানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ব্যাটসম্যান বোলারের বলে সঠিক সময়ে হিট করতে পারে, বাউন্ডারি সে-ই হাঁকায়। যারা তা পারে না, তারা হয় বোল্ড আউট। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ রাতে টাইমিংটা জিয়াউর রহমান ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পেরেছিলেন। যার ফলে মুহূর্তের মধ্যে তিনি অজ্ঞাত-অপরিচিত থেকে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হলেন।
আজ যখন ১৯৭১-এ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে কেউ কেউ নানা ধরনের কল্পকাহিনী বলে, কটাক্ষ করে, তখন সঙ্গত কারণেই এ দেশের মানুষের মনে প্রশ্ন জাগেÑ এরা কারা। কোথায় ছিল এরা ১৯৭১-এ? সেদিন তো তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি! প্রধান নেতা পাকিস্তানি সামরিক জান্তার কারাগারে চলে যাবার পর দিশেহারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতিকে একটু সাহসের বাণী, এটু আলোর দিশা দেয়ার জন্য তো কাউকে পাওয়া যায়নি। এটা ঠিক যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দেয়ার জন্য জিয়াউর রহমানকে কেউ সেদিন দায়িত্ব দেয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় সে দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। কেন তিনি সেদিন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজটি করেছিলেন? এর একমাত্র কারণ দেশপ্রেম। যাদের হৃদয়ে দেশপ্রেম সর্বদা জাগরিত থাকে, দেশ ও জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে তাদেরকে কারো হুকুম দিতে হয় না, নির্দেশনা দিতে হয় না। হৃদয়ে লালিত দেশপ্রেমই তাদেরকে বলে দেয় কী করতে হবে, কোন পথে যেতে হবে। ১৯৭১-এ জিয়াউর রহমানের বেলায় সেটাই ঘটেছিল। তাঁর দেশপ্রেম আলোকবর্তিকা হয়ে তাঁকে দেখিয়েছে এগিয়ে যাবার পথ।
কিছু বিরুদ্ধবাদী আছেন, যারা বাংলাদেশের তাবৎ খারাপ কাজের জন্য জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে থাকেন। তাদের মধ্যে এমন লোকও আছেন যারা জিয়াউর রহমানের বদান্যতায় রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছেন, বড় বড় চেয়ার দখল করার মওকা পেয়েছেন। কিন্তু তারা এটা খেয়াল করেন না যে, স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান নিজ পেশায় চলে গিয়েছিলেন। কারণ, তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। পেশাদার সৈনিক হিসেবেই তিনি দেশ ও জাতির সেবায় নিবেদিত হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে তিনি জড়িয়ে গেলেন রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যক্রমের সাথে। ভাগ্যই তাঁকে টেনে নিয়ে এলো রাজনীতির পাদপ্রদীপে। তিনি পরিণত হলেন বাংলাদেশের রাজনীতির বাঁক পরিবর্তনের মহানায়কে। যারা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করেন, তারা এটা ভেবে দেখেন না যে, এ সমালোচনার অধিকারটুকুও তাঁরই অবদান। তিনি বাকশালের নিগড় থেকে এদেশের মানুষকে মুক্তি দিয়েছিলেন, ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। জিয়াউর রহমান ইচ্ছে করলে বাকশালী সংবিধান বহাল রেখে খুব সহজেই রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। কেননা, তিনি ছিলেন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণই রাষ্ট্রের মালিক এবং তারাই রাষ্ট্রীয় সব ক্ষমতার উৎস। আর সে জন্যই তিনি জনগণের হাতে রাষ্ট্রের নেতৃত্ব নির্ধারণের ক্ষমতা দিয়ে দিলেন। একদলীয় স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করলেন। আজ ছোট-বড় যেসব রাজনৈতিক দলের নেতারা জিয়াকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলেন, তারা কি একবারও ভেবে দেখেন, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় ব্যবস্থা ফিরিয়ে না আনলে তারা আজ কোথায় অবস্থান করতেন?
জিয়াউর রহমানের আরেকটি মহৎ অবদান এ দেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া। বাকশাল সরকার চারটি দৈনিক পত্রিকা রেখে দেশের সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সংবাপত্রের স্বাধীনতাকে অবারিত করে দেন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বহু পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ওগুলোর মধ্যে কিছু পত্রিকা জিয়া সরকারের, এমনকি প্রেসিডেন্ট জিয়াকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে সংবাদ-নিবন্ধ প্রকাশ করলেও তিনি কখনো ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেননি। আসলে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী জিয়াউর রহমান সমালোচনাকে সহজভাবেই গ্রহণ করতে জানতেন। কারণ আক্ষরিক অর্থেই তিনি একজন গণতন্ত্রী ছিলেন ।
মৃত্যুর ছত্রিশ বছর পরও জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষের কাছে প্রিয় একটি নাম। সময়ের ব্যবধান তাঁর প্রতি এ দেশের মানুষের ভালোবাসার তারতম্য সৃষ্টি করতে পারেনি। একজন সৎ, দেশপ্রেমিক, মানবতাবাদী এবং জনদরদী রাষ্ট্রনায়কের কথা চিন্তা করলেই জিয়াউর রহমানের নামটি চলে আসে। বিদ্বেষীরা যতই ঈর্ষান্বিত হোক, জিয়া আপন কর্মের গুণেই এদেশের মানুষের হৃদয় সিংহাসনে স্থায়ী আসন লাভ করেছেন। কারণ, তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের পথ দেখাতে পেরেছিলেন। তিনি রাজনীতিকে কেবলমাত্র রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবার বাহন হিসেবে দেখেননি। দেখেছেন দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের মাধ্যম হিসেবে। তিনি প্রাসাদ থেকে রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের কাছে, যারা দেশের প্রকৃত মালিক এবং যাদের জন্যই রাজনীতি। তিনি জনগণকে এই বলে সচেতন করে তুলেছিলেন যে, রাজনীতি তাদের জন্য এবং তাদেরকে অবহেলা-অবজ্ঞা করে এ দেশে রাজনীতি করা যাবে না।
এ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। এটা ছিল একটি কালজয়ী ঘোষণাপত্র। যেখানে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যাবার দিকনির্দেশনা ছিল। গত ছত্রিশ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় পালাবদল ঘটেছে অনেকবার। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিও ক্ষমতায় এসেছে তিনবার। লক্ষণীয় বিষয় হলো, ওই সরকারগুলো দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করলেও তারা জিয়াউর রহমানের ১৯ দফাকে অতিক্রম করে যেতে পারেনি। চল্লিশ বছর পরও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯ দফা আজও প্রাসঙ্গিক, সেটাকে এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। কারণ তাঁর ১৯ দফা একটি বিশেষ সময়ের জন্য প্রণীত ছিল না, ওটা ছিল যুগোত্তীর্ণ একটি ভিশন। জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা পর্যালোচনা করলে এ সত্যটি প্রতিভাত হয়ে উঠবে। তাঁর সে উন্নয়ন পরিকল্পনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, চিকিৎসা, গ্রামোন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত ছিল। আজ যেসব রূপকল্প-ভিশন আমরা দেখছি, সেগুলো প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ১৯ দফারই নবতর সংস্করণ। পার্থক্য শুধু সময় এবং পরিবেশের। জিয়াউর রহমান তিন যুগ আগে যে ভিশন ঘোষণা করে গেছেন, আজকের রাজনৈতিক দলগুলো তার পরিবর্ধন-পরিমার্জন ও যুগোপযোগী করে পরিবেশন করছে। এখানেই জিয়াউর রহমানের সাফল্য। একটি কথা বলা বোধকরি অত্যুক্তি হবে না যে, জিয়াউর রহমানের ১৯ দফাকে বাদ দিয়ে বা এড়িয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। বস্তুত: ভিশনারি লিডার যারা, তাঁদের কাজগুলো এমনই হয়। তিনি চলে যান, কিন্তু তাঁর কাজ, তাঁর কথা তাঁকে অমর করে রাখে। তাঁরা তাঁদের দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ এবং জনগণের প্রতি কমিটমেন্টের কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
জিয়াউর রহমান এ দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকার আরেকটি কারণ আমাদের জাতিসত্তার উদঘাটন। ‘আমরা বাংলাদেশী’Ñ এ পরিচয়ে বিশ্বসমাজে মাথা উঁচু করে চলার কথা তিনিই বলে গেছেন। ভাষাগত সাযুজ্যের কারণে প্রতিবেশী একটি দেশের একটি অঙ্গরাজ্যের নাগরিকদের সাথে আমাদের জাতীয়তাকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সে বিভ্রান্তির অবসান ঘটান তাঁর ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ তত্ত¡ উপস্থাপনের মাধ্যমে। বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতিগত এ পরিচিতি উদঘাটনের জন্য তিনি এদেশের মানুষের কাছে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন এবং থাকবেন।
প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানকে পুরোপুরি বিশ্লেষণ করা ছোট পরিসরে সম্ভব নয়। স্বল্পদৈর্ঘ্যের রাজনৈতিক জীবনে তিনি এত বড় বড় কাজ করে গেছেন যে, সেসব তুলে ধরতে হলে বিশাল ক্যানভাস প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ই হলো সে ক্যানভাস, যেখানে কোনো শিল্পীর তুলির ছোঁয়া ছাড়াই অঙ্কিত হয়ে আছে কর্মবীর এ রাষ্ট্রনায়ক ও তাঁর কীর্তির ছবি। হাজারো চেষ্টা করলেও সে ছবি মুছে ফেলা কারো পক্ষে কখনোই সম্ভব হবে না।
লেখক : সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক