মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের সমরগাথা : পর্ব- ৩

জিয়া লাইব্রেরি ডেস্ক : অপারেশনে যাওয়ার আগে জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতি তদারকি করছেন ।

সে সময় জিয়া আর শাফায়াত একসাথে ঘুরে বেড়াতেন রৌমারী মুক্তাঞ্চলের আনাচে কানাচে মাতৃভূমির স্বাদ নেয়ার জন্য। তাদের ভেতরে দাগ কেটেছিলো স্বাধিকার-স্বাধীনতাকামী এদেশের মানুষের সুকঠিন প্রতিরোধ সংকল্প, ‘মেরে মরবো’ যুদ্ধ ক্ষুধা।

তেমনই দু’টো ঘটনা শাফায়াত জামিলের কাছ থেকে –

এই রৌমারি থেকেই জিয়ার নির্দেশে বকশীগঞ্জ, ছালিয়া পাড়া , কোদালকাটি যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। ১৮ আগস্ট কোদালকাটি যুদ্ধে ৩৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। যুদ্ধে ব্যাপকভাবে মার খেয়ে পাকিস্তানি আর্মি কোদালকাটির দখল ছেড়ে চিলমারীতে পালিয়ে যায়।

চিলমারী , সেপ্টেম্বর ১৯৭১ , মেজর জিয়া , মেজর সাফায়াত জামিল , লে: নুরুন্নবী ।

কোদালকাটির সেই সম্মুখ সমরে জিয়া নিজে উপস্থিত ছিলেন।

রৌমারী , সেপ্টেম্বর , ১৯৭১, দেওয়ানগঞ্জে একটি পাকিস্তানী ঘাঁটিতে সফল অপারেশনের পর মুক্তিযোদ্ধারা ফিরে আসছে।

এ সময় জেড ফোর্সের মুক্তিযুদ্ধের উপর মার্কিন এনবিসি চ্যানেলের একটি দল রবার্ট রজার্সে নেতৃত্বে সারা বিশ্বে সাড়াজাগানো দু’টি প্রতিবেদন তৈরি করে – A Country Made for Disaster এবং Dateline Bangladesh। 

ইউটিউবে মেজর জিয়ার একটি মুক্তিয্দ্ধু চলাকালীন ইংরেজি সাক্ষাৎকার বহুল প্রচারিত। এটি সম্ভবত রবার্ট রজার্স জিয়ার যে সাক্ষাৎকার রৌমারিতে নিয়েছিলেন তারই খন্ডাংশ।

নুরুন্নবি সেখানে কাস্টমস অফিস, থানা, স্কুল এবং পোস্ট অফিসের কাজ শুরু করেছিলেন। ১০ শয্যার ১টি হাসপাতালও চালু করেছিলেন।

চমকপ্রদ এই যে যুদ্ধ চলাকালেই জিয়া রৌমারী থেকে ১ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তহবিলে জমা দিয়েছিলেন।

২১ আগস্ট জিয়া ক্যাপটেন অলি আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় রৌমারি আসেন এবং দিনক্ষণ আলোচনা করেন কখন স্বাধীন বাংলাদেশের ১ম বেসামরিক প্রশাসন উদ্বোধন করা যায়।

২৮ আগস্ট সকাল ৮টায় মেজর জিয়াউর রহমান মুক্ত বাংলাদেশের ১ম পোস্ট অফিস উদ্বোধন করেন।

একে একে জিয়া থানা সদর, হাসপাতাল, স্কুল, আদালত, রাজস্ব ও অন্যান্য অফিস উদ্বোধন করেন।

সেদিন মেজর জিয়া সেখানে হাজার হাজার জনতার উদ্দেশ্য ভাষণে বলেন –

“রৌমারির প্রতিটি নারী-পুরুষ আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে…”

জবাবে সমবেত জনতা গর্বভরা গর্জন আওয়াজে জিয়াকে অভিনন্দিত করেন –

“জয় বাংলা, জয় জিয়া, জয় মুক্তিবাহিনী”

আর এভাবেই মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে কালুরঘাটের “আমি মেজর জিয়া বলছি” কিংবদন্তির পর আরো একবার ভাগ্যের বরমাল্য পেলেন মেজর জিয়াউর রহমান বীরউত্তম।

তথ্যসূত্র

১. মুক্তির জন্য যুদ্ধ: কর্নেল শাফায়াত জামিল বীরবিক্রম

২. এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য: মে. জে. মইনুল হোসেন বীরবিক্রম

৩. উইটনেস টু সারেন্ডার: মেজর সিদ্দিক সালিক

৪. বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি: মুক্তিযুদ্ধে রৌমারি: অজয় রায়

৫. মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট

৬. মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা: গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ওয়েবসাইট

সংবাদপত্র সংযুক্তি

তোমাদের এই ঋণ শোধ হবেনা / দৈনিক প্রথম আলো

১. ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ বীরউত্তম-এর পরিবারের সাক্ষাৎকার

২. লে. আবদুল মান্নান বীরবিক্রম-এর সাক্ষাৎকার

৩. আবদুল হক বীরপ্রতীক-এর সাক্ষাৎকার

৪. জালাল আহমেদ বীরপ্রতীক-এর পরিবারের সাক্ষাৎকার

৫. এম এ মান্নান বীরবিক্রম-এর সাক্ষাৎকার

৬. শামসুজ্জামান বীরউত্তম-এর পরিবারের সাক্ষাৎকার

১-৩: কামালপুর বিওপির যোদ্ধা

৪-৬: নকশী বিওপির যোদ্ধা

দৈনিক সমকাল / লে. ক. নুরুন্নবী খান বীরবিক্রমের সাক্ষাৎকার

দৈনিক ভোরের কাগজ / ডিসেম্বর ৪, ২০০৯

দৈনিক আমার দেশ / ডিসেম্বর ১৫, ২০০৯

দৈনিক ইত্তেফাক / মার্চ ২৬, ২০১১

জিয়া লাইব্রেরী অনলাইন
Logo