জিয়া লাইব্রেরি ডেস্ক : বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অবিনাশী নক্ষত্র শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরোত্তম। সময় যত যাচ্ছে ততই জিয়ার বীরত্বগাঁথা সূর্যের আলোর মত ছড়িয়ে পড়ছে দেশের প্রতিটি এলাকায়।
১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে ততকালীন মেজর জিয়ার কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিচে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো।
২৫ জুন নাগাদ জেডফোর্স বাংলাদেশের প্রথম পদাতিক ব্রিগেড হিসাবে সংগঠিত হয়। অবশ্য একে খন্দকারের মতে ৭ জুলাই জেড ফোর্স নাম দিয়ে প্রথম ব্রিগেড করা হয়।
১) তেলঢালায় উদ্দীপনামূলক বক্তব্য
২৮ জুলাই ১৯৭১
তেলঢালা প্রশিক্ষণ শিবির।
“আগামী দু এক দিনের মধ্যেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকতে যাচ্ছি আমরা। আমরা শত্রুর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে লিপ্ত হব। আমি চাই তৃতীয় বেংগলের যোদ্ধারা শত্রু হননে তাদের প্রশিক্ষণের বাস্তব প্রয়োগ দেখাক।
আমাদের লক্ষ হবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশকে স্বাধীন করা। আমার বিশ্বাস জেডফোর্সের প্রত্যেক যোদ্ধা এ লক্ষে তাদের জীবন দিতেও কুণ্ঠিত হবে না।”
তেলঢালাতে প্রশিক্ষণ শেষে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে জিয়ার ছোট্ট উদ্দীপনামূলক বক্তব্য।
২) বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রথম মুক্ত রৌমারীতে জিয়ার নেতৃত্ব
অস্থায়ী সরকারের প্রশাসনের কথা আমরা সবাই জানলেও ৭১ সালে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে স্থাপিত প্রথম প্রশাসনের কথা অনেকেই জানি না। NBC চ্যানেল-এ সময় A country made for disaster নামে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করে, যার শুট করার সময় রৌমারি অঞ্চলে কর্নেল শাফায়াত জামিল যাবতীয় সহযোগিতা করেন। কর্নেল শাফায়াত জামিল তাঁর “১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, রক্তার্ত মধ্য অগাস্ট এবং ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর” নামক গ্রন্থে সেই সব তথ্য উল্লেখ করেছেন। কর্নেল শাফায়াত জামিল এবং A country made for disaster থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে স্বাধীন প্রশাসন বিষয়ক অতি গুরুত্বপূর্ন কিছু তথ্য পাওয়া যায়। যার চম্বুক অংশ নিচে উল্লেখ করছি।
বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রথম মুক্ত রৌমারীতে প্রথম প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন জেডফোর্স অধিনায়ক মেজর জিয়া। লেঃ কর্নেল নবী, মেজর জিয়ার নির্দেশে স্থানীয় গন্যমান্যদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডে সর্বত্মাক সাহায্য করার জন্য কমিটি গঠন করে।
রৌমারীতে কাস্টমস অফিস, থানা, স্কুল, ১০ শয্যার হাসপাতাল ও পোস্ট অফিস কাজ শুরু করে।
২৭ অগাস্ট সকাল ৮.০০ টাতে বাংলাদেশের প্রথম পোস্ট অফিসটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জিয়া নিজে।
পাশাপাশি রৌমারী সদরে তরুন যুবকদের জন্য বড় আকারে একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
৩) মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি জিয়া
মহান মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনে ব্যস্ত সময় পার করছেন বীর মেজর জিয়াউর রহমান, দম ফেলার ফুসরৎ নেই।
যুদ্ধের শেষের দিকে এক শীতের রাতে কোন একটি কুড়ে ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।
পরের ভোরে তিনি হন্ত দন্ত করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন বুড়ির কুড়ে ঘর থেকে। অধিনস্ত সৈনিকদের অপারেশনের একটি গুরুত্বপূর্ন নির্দেশনা দিতে হবে তাকে। ঠিক সেই সময় কুড়েঘরের মালিক শীর্ন চোয়ালের কঙ্কালসার বুড়ি, জিয়াকে থামিয়ে দিয়ে ঝাপসা চোখে কাপা কন্ঠে প্রশ্ন করলেন-
“আবার কবে আসবা বাবা?”
“জানিনা মা” উত্তর দিলেন জিয়া।
জিয়া আরো বললেন –
“তবে তোমার মতই দুঃখী এই দেশ মাকে আমি যেন মুক্ত করে ফিরতে পারি এই দোয়াই করো”
হ্যা, বুড়ির এই দেশপ্রেমিক ছেলে তার কথা রেখেছিল। দেশটাকে স্বাধীন করেই ফিরেছিল !
এরপর সময়ের পরিক্রমাতে সেনাপ্রধান তারপর রাষ্ট্রপতি…হলেন সেই ছেলে।
৭৪ এর দূর্ভিক্ষের রেশ আর বাকশালের কালো থাবা থেকে মুক্তির পর দেশের মানুষ তখন প্রেসিডেন্ট জিয়ার দিকেই তাকিয়ে। জিয়ার কাঁধে তখন সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন পূরনের দায়ভার।
১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বরের কোন একরাতে হঠাত্ শহীদ জিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
আজকের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর শিশু তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান তখন ঘুমাচ্ছিলেন । নির্ঘুম বাকি রাত উদাস মনে এ পাশ ও পাশ করেই কাটিয়ে দেন এই রাষ্ট্রনায়ক ।