রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা

জিয়া লাইব্রেরি ডেস্ক : ১৯৭১-এর মার্চ মাসে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে একজন মেজর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী আর পারিবারিক গণ্ডির বাইরে তাঁর কোনো পরিচিতি ছিল না। কিন্তু ইতিহাসের সঙ্গে যাঁর সাক্ষাৎকার নির্ধারিত ছিল, তাঁকে তো জনগণের সামনে আসতেই হবে। আর তাই তাঁর কণ্ঠে যখন ‘আমি মেজর জিয়া বলছি…’ এ কথা দিয়ে আরম্ভ করে স্বাধীনতার ঘোষণা শোনা গেল, তখনই তাঁর পরিচয় পাওয়া গেল। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম, যা এ দেশের জনগণের হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন ছিল, তাঁর ডাকের ফলে তারই বাস্তবায়ন হলো।

নির্মোহ জীবনদৃষ্টির অধিকারী যোদ্ধা জিয়াউর রহমান এর পরে আরো অনেকের মতো যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কোনো ব্যক্তিগত লাভালাভের আশা না করে পেছনের কাতারে চলে গেলেন। দ্বিতীয়বার তাঁকে দেখা গেল ১৯৭৫-এর ৭ নভেম্বর। এর আগে ওই সালেরই ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তবে লক্ষণীয় যে এমন হত্যাকাণ্ডের পরে যিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেন তিনিও ছিলেন আওয়ামী ঘরানারই সামনের কাতারের একজন ব্যক্তি খন্দকার মোশতাক আহমদ।

এর পরবর্তী আড়াই মাস সময়ে জাতীয় জীবন অনেক টালমাটালের মধ্য দিয়ে গেছে। এর সর্বশেষ পর্যায়ে জেনারেল খালেদ মোশাররফ কর্তৃক জিয়াউর রহমানকে ক্যান্টনমেন্টে অন্তরীণ করা, খালেদ মোশাররফের ক্যুর প্রচেষ্টা, ভারতীয় প্রচারমাধ্যম থেকে প্রচার, তার মায়ের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তার পক্ষে স্লোগান ও মিছিল ইত্যাদি যখন ঘটছে তখন ক্যান্টনমেন্টের সেনা সদস্যরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে জিয়াউর রহমানকে অন্তরীণ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে। এসব ঘটনার পর প্রধান বিচারপতি সায়েম রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক শাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ও জিয়াউর রহমানকে ডেপুটি প্রধান সামরিক প্রশাসক নিয়োজিত করেন। এসবেরও পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জেনারেল জিয়াউর রহমান একসময়ে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।

এ প্রসঙ্গে বলে রাখা প্রয়োজন যে একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জনগণের সামনে তাঁকে হেয় করার জন্য নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যেমন তিনি নাকি সামরিক শাসন জারি করেন, যা সর্বৈভ মিথ্যা। কারণ খন্দকার মোশতাক ২০ আগস্ট সামরিক শাসন জারি করেছিলেন।এ কথাও বলা হয় যে জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর নায়কদের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে দায়মুক্তি দিয়েছিলেন। এও আরেক মিথ্যা প্রচারণা। দায়মুক্তি খন্দকার মোশতাকই দিয়েছিলেন, সেটা ২৬ সেপ্টেম্বর ইমডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। জিয়াউর রহমান নন। অপর পক্ষে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্রকে যে পুরোপুরি বদলানো হয়েছিল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে তা পুনরায় ফিরিয়ে দেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৪-এর ২৮ ডিসেম্বর জনগণের যেসব মৌলিক অধিকার স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়, চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রপত্রিকার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ রহিত করেন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণকারী যেসব আইন করা হয়েছিল, জিয়াউর রহমান সেসবও বাতিল করে বিচারালয় এবং মাননীয় বিচারকদের অধিকারগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।

বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রেও তিনি অসামান্য সাফল্য লাভ করেন। এ বিষয়ে তাঁর মূল দৃষ্টিভঙ্গি ছিল দেশের সার্বভৌমত্ব কোনোরূপভাবে ক্ষুণ্ন না করে কিভাবে দেশের স্বার্থ সবচেয়ে বেশি আদায় করা যায়। তিনি সে সময়ের দুই পরাশক্তির মধ্যে কোনোটিরই দিকে বেশি না ঝুঁকে কী করে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সাহায্য-সহযোগিতা নিশ্চিত করা যায়, এসব তাঁর সৃজনশীল, গঠনমূলক ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি ও একই সঙ্গে তাঁর চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে তিনি অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বাধিক সম্ভব সাফল্য লাভ করেন। বিস্তৃত ব্যাখ্যায় না গিয়ে নিম্নে এ ধরনের কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো :

১. ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঝুলে থাকা গঙ্গার পানি বণ্টনের সাময়িক সমাধান করা হয়। সমাধানের ফর্মুলা এমনই সুস্পষ্টভাবে লেখা ছিল যে ভারতের পক্ষে সেখান থেকে সরে যাওয়ার পথ আদৌ ছিল না এবং এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই আর কোনো আপত্তি করা হয়নি। অপর পক্ষে ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন বিষয়ে যে চুক্তি করা হয়, তার ভাষ্য এমনই দুর্বল ছিল যে প্রতিবছরই তারা শুষ্ক মৌসুমে ‘চুক্তি অনুযায়ী পানি পাওয়া যাচ্ছে না’_এমন কথা পত্রপত্রিকায় প্রায়ই খবর বেরোয়। প্রকৃতপক্ষে এ চুক্তির ফলে গত ১৪-১৫ বছরে গঙ্গার প্রায় দেড় ডজন শাখা নদী শুকিয়ে গেছে।

২. যৌথ আলোচনা ও জরিপের মাধ্যমে তালপট্টি সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের সমঝোতা করেন।

৩. বার্মার সঙ্গে সীমান্তরেখা নির্ধারণ করা হয় ও শরণার্থী সমস্যা আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

৪. জিয়াউর রহমানের আমলেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো জাপানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়।

৫. ১৯৭৯ সালের ওআইসির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আল কুদস কমিটিতে সদস্য নির্বাচিত হয়।

৬. ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ জোটনিরপেক্ষ ব্যুরোর সদস্য নির্বাচিত হয়।

৭. ওআইসি কাঠামোর মধ্যে যুদ্ধরত ইরান ও ইরাকের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শান্তি কমিটির একক প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। এও আরেক বিরল সম্মান নিঃসন্দেহে।

এ ছাড়া তিনি একদিকে ওআইসিভুক্ত দেশগুলো, অপরদিকে জোটনিরপেক্ষ দেশগুলো এবং শিল্পোন্নত ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর ফলে ১৯৭১ থেকে ৭৬ সময়কালে বহিঃসম্পদ প্রবাহ যা ছিল ৩.৯৭৪ মিলিয়ন ডলার, তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৬.৭৭২ মিলিয়ন ডলার। আরো উল্লেখ করা যেতে পারে, জিয়াউর রহমানই দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সমন্বয়ে সার্ক গড়ে তোলার জন্য এতদঞ্চলের সব দেশই ভ্রমণ করেন এবং সার্কের গোড়াপত্তন করেন।
জাতীয় রাজনীতিতে জিয়াউর রহমান গুণগত পরিবর্তন আনয়ন করেন। তাঁর অপর এক কীর্তি ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী’ ধারণার মত প্রকাশ। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের কথা বললেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ হয় নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠী অথবা ভাষানির্ভর। যদি তা নৃতাত্তি্বক ধারণানির্ভর হয়, তাহলে যারা গোষ্ঠী হিসেবে বাঙালি নয় তারা এর সঙ্গে নিজেদের একাত্দ বোধ করবে না আর তাই তা আমাদের অবস্থার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। কারণ বাংলাদেশে একাধিক জাতিগোষ্ঠী বাস করে। অপর পক্ষে যদি ভাষানির্ভর হয়, তাহলেও তা যৌক্তিক হবে না। কারণ বাংলাভাষী জনগোষ্ঠী আমাদের রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরেও বসবাস করছে। আর তাই তা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করবে না। অথচ জাতীয় ঐক্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদের ধারণা ধর্মের ওপরও নির্ভরশীল নয়। এ কথা সত্য যে এ দেশের জনগোষ্ঠীর বিরাট অংশ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। কিন্তু এও সত্য যে সারা পৃথিবীতে কোটি কোটি আরো অনেক মুসলমান বিভিন্ন দেশে বাস করছে। অতএব কেবল ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ বাস্তবসম্মত নয়। এও উল্লেখ করা যায় যে পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক জাতীয়তা এক অংশ দ্বারা অন্য অংশের শোষণ ঠেকাতে পারেনি। আর তাই ভৌগোলিকভাবে বিভক্ত দেশ আজ রাজনৈতিকভাবেও আলাদা হয়ে গেছে। অর্থাৎ শহীদ জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদের যে ধারণা তুলে ধরলেন তা নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠীবদ্ধতা, ভাষা এবং ধর্মের সবকিছুর ঊর্ধে, কিন্তু তা সীমাবদ্ধ ভৌগোলিক সীমারেখা দ্বারা, যে সীমারেখা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঐতিহাসিক বিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ নামে আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে পেয়েছি। এ দেশের ইতিহাস এবং ভূগোল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বলে আমাদের কাছে এ সত্তা দান করেছে।

মনে রাখা দরকার, একটি নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশের জন্য জাতীয়তাবাদী চেতনা প্রয়োজন। কেননা, তা ছাড়া জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যাবে না। কিন্তু ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে তা অর্থহীন। প্রকৃতপক্ষে যদি আমরা জনগণের মৌলিক চাহিদা না মিটাতে পারি, তাহলে কোনো দর্শন বা কোনো রাজনীতি শেষ বিচারে ধোপে টিকবে না। আর জিয়াউর রহমান দেশের সমস্যা অনুধাবন করার জন্য আর এগুলো সমাধানের পথ খোঁজার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির ও গোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতেন। এসবের ফল তাঁর ১৯ দফা অর্থনৈতিক উন্নয়নের কর্মসূচি, যার মধ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতকে। তাঁর এ কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষ, কৃষক, শ্রমিক এবং সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সবার ভাগ্য উন্নয়নের ব্যবস্থা। তিনি সঠিকভাবেই অনুধাবন করেছিলেন, কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রাম উন্নয়নই হবে এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল ভিত্তি। আর এ কাজ করার জন্য তিনি অগ্রাধিকার দিলেন পানি উন্নয়নের, যা থেকে এল তাঁর খালখনন কর্মসূচি। উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বের এমনই চমক ছিল যে, যে দেশে অতিসামান্য পরিমাণ জমির জন্য একে অপরকে হত্যা করে তারা তাদের জমি এবং স্বেচ্ছাশ্রম তাদের প্রিয় প্রেসিডেন্টকে দিতে থাকল।

ফল হলো এই, সরকারি তহবিল থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো অর্থ ব্যয় না করে তিনি এক হাজারেরও বেশি মজা নদী বা ভরাট খাল পুনরুজ্জীবিত করলেন। জিয়াউর রহমানের কঠোর শ্রম, সাধারণ মানুষের জন্য তাঁর সহমর্মিতা এবং দূরদৃষ্টির ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেল। বৃদ্ধি পেল শিল্প উৎপাদন। সত্তরের দশকের প্রথম দিকে বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে আবার তিনি সচল করতে সক্ষম হন। সংবিধান সম্পর্কে একটি বিষয় উল্লেখ করে আমরা এ আলোচনার ইতি টানব। শহীদ জিয়া যেসব সাংবিধানিক সংশোধনী আনয়ন করেন তার মধ্যে সংবিধানের প্রারম্ভে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম_এ শব্দত্রয় যোগ করেন এবং ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি বাদ দেন। এ কারণে কোনো কোনো মহল তাঁকে সাম্প্রদায়িক আখ্যায়িত করেন। কিন্তু এরও একটি কারণ ও পটভূমি ছিল, যা নিম্নরূপ।
ভারতের সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হবে এমন কোনো কথা প্রথমে ছিল না। ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি যোগ করা হয় ১৯৭৬ সালে, যা কার্যকর হয় ১৯৭৭ সালের ২ জানুয়ারি। কী উদ্দেশ্যে তা করা হয়েছিল তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে আমাদের ইতিহাস ও ভূগোল এমন যে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে যদি কোনো আদর্শিক তফাত না থাকে, তাহলে দুটি রাষ্ট্রের আলাদা সত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। হয়তোবা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এমন আশঙ্কা করেই সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটি বাদ দিয়ে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ যোগ করেছিলেন। অবশ্য দেশের জনগণের বিরাট অংশের ধর্মানুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন নিশ্চয় আরেকটি কারণ।

জিয়া লাইব্রেরী অনলাইন
Logo