জিয়া লাইব্রেরি ডেস্ক : সাবকে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’ অভিহিত করে তার অনুসৃত পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র, মানুষের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, একদলীয় বাকশালী অন্ধকার থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের আদলের মধ্যে ঝুলিয়ে দেয়া ছিল জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় কীর্তি। আমি মনে করি, তিনি আমাদের সামনে সবসময় উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো থাকবেন। সেই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে লক্ষ্য করেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা একটা অত্যন্ত বিরূপ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আছি। এই বিরূপ প্রতিকূল অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ আমাদেরকে জিয়াউর রহমান দেখিয়েছেন এবং আমরা এখন দেখছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজকে যে বক্তব্য দিয়েছেন-এটা আমাদেরকে সেই দিক নির্দেশ করে, যেই দিক নির্দেশের মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে সক্ষম হব। আমরা আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হব এবং আমরা সত্যিকার অর্থেই একটি সুখী, সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, মানুষের বাংলাদেশ, আলোকিত বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে সক্ষম হব।
তিনি আরও বলেন, শুধু বলতে চাই, একটা কঠিন সময় আমরা পার করছি। একদিকে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ। অন্যদিকে একটা ফ্যাসিবাদী এক নায়কোতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকারের সমস্ত রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেয়া, জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত, এটাকে প্রতিরোধ করে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বিএনপির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এই আলোচনা সভা হয়। ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন। সারাদেশে মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা সমবেত হয়ে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে দেশ বিনির্মাণে যে যে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে সেই সব ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান সফল। এর জন্য তারা জিয়াউর রহমান, তার পরিবার এবং তার প্রতিষ্ঠিত বিএনপিকে ভয় পায়।
বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে বিএনপির নেতাকর্মীদের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা আজকে যে কথা বলতে পারছি তা জিয়াউর রহমানের অবদান, আজকে আওয়ামী লীগ যে কথা বলতে পারছে, রাজনীতি করতে পারছে- সেটাও তার অবদান। অথচ সে অবদানকে তারা (আওয়ামী লীগ) অকৃতজ্ঞের মতো অস্বীকার করে। তারা তার মুক্তিযুদ্ধের পদক ছিনিয়ে নিতে চায়।’
জিয়াউর রহমানকে ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের জনক’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমান আমাদের দৃশ্যের আড়ালে হলেও মনের আড়ালে নয়। আমি, আমরা, দেশ-বিদেশে গণতন্ত্রমনা মানুষ তাকে স্মরণ করে। তরুণরা শ্লোগান দেয়, জিয়া তোমায় মনে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, যতদিন গণতন্ত্র অন্ধকারে থাকবে, ততদিন গণতন্ত্র আলোর মুখ দেখবে না, ততদিন এদেশের মানুষ জিয়াকে মনে করবে।
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বরিশাল মহানগরের মজিবুর রহমান সারোয়ার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের হাবিব উন নবী খান সোহেল, উত্তরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, চট্টগ্রাম মহানগরের আবুল হাশেম বক্কর, উত্তরের গোলাম আকবর খন্দকার, সিলেট মহানগরের নাসিম হোসাইন, কুমিল্লা মহানগরের হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াসীন, রাজশাহী মহানগরের মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, যশোরের অধ্যাপক নার্গিস বেগম, লালমনিরহাটের আসাদুল হাবিব দুলু বক্তব্য দেন।
এছাড়া দলের অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুব দলের সাইফুল ইসলাম নিরব, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন ও ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন আলোচনায় বক্তব্য দেন।