জিয়া লাইব্রেরি ডেস্ক : দীর্ঘ কয়েক বছরের নিরবতার পর গত কয়েকদিন আগে লন্ডনের একটি প্রোগ্রামে বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানকে অংশগ্রহন করতে দেখা গেছে। ব্যাস! এতেই যেন বর্তমান বাংলাদেশ সরকারসহ আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিকদের মাথায় বজ্রপাত ঘটেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী এমপিরা যেভাবে রিএ্যাক্ট করেছেন তাতে মনে হয়েছে তারা যেন চোঁখে সর্ষেফুল দেখছেন। তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত চিন্তায় যেন তারা অধীর। বিদেশ বিভূইয়ে এক ধরনের নির্বাসিত অবস্থায় তারেক রহমান একটি প্রোগ্রামে হাজির হয়েছেন আর এদিকে সরকারের যেন পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। খবর প্রচার হওয়ার পর সত্বরই ঘোষনা দেয়া হল যে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি দাড় করানো হবে; প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তায় তাকে ধরিয়ে আনা হবে। দেখা গেল পরের দিনই আজ্ঞাবহ বিচার ব্যবস্থাও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সমন জারি করলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, আদালত কি এতদিন জানতেন না যে তারেক লন্ডনে আছেন। এতদিন তাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার কার্যক্রম চললো অথচ এখন মিডিয়ায় এই খবরটা চাউর হবার পর আদালতের এমন সমনের মানেটা কি? তবে আমি আর এ বিষয়ে যাচ্ছি না। কারণ আমি আগেই বলেছি বর্তমান বিচার ব্যবস্থা এখন সরকারের আজ্ঞাবহ একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সূতরাং সরকারের নির্দেশেই সমন জারির ব্যাপারটা ঘটেছে তা ন্যুনতম বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষও বুঝতে পেরেছে। কিন্তু সরকার মন্ত্রী এমপিরা হইচই করে এবং তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহন করে তারেককে একজন অতি মানবের অবস্থানে দাড় করিয়েছেন । ব্যাপরটা যেন আমাদের কাছে ‘রাষ্ট্র বনাম তারেক রহমান’ টাইপের একটি অঘোষিত যুদ্ধ বলে মনে হচ্ছে। একজম মাত্র মানুষের বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রের এমন কর্মতৎপরতা (!) সত্যিই হাসির খোরাক জোগায়। ম.খা আলমগীরের নাড়াচাড়া তত্বের (!) কারণে যেমন রানা প্লাজা ধ্বসে পড়েছে তেমনি তারেক রহমানের এই নড়ে উঠার কারণেই সম্ভবত আওয়ামীরা তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভেঙ্গে পড়ার ভয় করছেন। তাদের এই উদ্বিগ্নতা এটাই প্রমাণ করছে। বিষয়টা পরিস্কার করার জন্য আমরা একটু পিছনের দিকে ফিরে তাকাই।
বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে তারেক রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বিরাট একটি পরিবর্তনের জোয়ার সৃষ্টি করেছিল। একেবারে তৃনমুল পর্যায়ের কর্মীদের কাছে পৌছে গিয়ে নিজের একটি স্বতন্ত্র ইমেজ তৈরী করে নিয়েছিল। তেমনিভাবে তরুন প্রজন্মের কাছে একজন হিরো হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। গন মানুষের কাছেও তারেক রহমানই বাংলাদেশের রাজনীতির একমাত্র ভবিষ্যত কর্ণধার বলে প্রতিয়মান হচ্ছিল। শহীদ প্রিসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মত তারেক রহমানও উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তার শীর্ষে পথে আরোহন করছিল। মইনুদ্দিন ফখরুদ্দিন এর বেআইনী সরকারের আমলে মুলতঃ পরিবারতন্ত্রকে রুদ্ধ করার জন্যই তারেক রহমানকে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় ফাসিয়ে গ্রেফতার করে। সীমাহীন নির্যাতন নিপীড়নের পর পঙ্গু করে দিয়ে অবশেষে তাকে বিদেশ যেতে বাধ্য করা হয়। মইনুদ্দিনের সরকার যখন ’মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্থবায়নে ব্যর্থ হল তখন তাদের ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক দল হিসেবে আওয়ামীলীগকেই ক্ষমতার পথ সুগম করে দিয়ে গেল । আওয়ামী লীগ ক্ষমতারোহনের পর থেকে চার বৎসর যাবত প্রবাসে তারেক রহমানের নিশ্ক্রিয়তায় তারা অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিল। যে শিক্ষা তাকে দেয়া হয়েছে তাতে সে আর রাজনীতির পথ মাড়াবে না বলেই হয়ত তারা ধরে নিয়েছিল । যার কারনে পূর্বে তারেক রহমানের অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠার খবর মিডিয়ায় এলেও তাতে সরকারের কোন উৎকন্ঠা দেখা যায়নি। কিন্তু যখনই তারেক রহমান একটি রাজনৈতিক প্রোগ্রামে অংশ নিল তখনই তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। আসলে ওরা সত্যিই ভয় পাচ্ছে। তারেককে জনতার মাঝে আসতে দিলে ‘ভিশন ২০২১’ নয় ২০৫০ সাল পর্যন্তও হয়ত তাদের ভিশনটা তাদের কাছে অন্ধকার বলে দৃশ্যমান হচ্ছে।